
উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের একটি আবাসিক ভবনের নাম করে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর যে দুর্নীতির মহোৎসব চালিয়েছে, তা রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাটের একটি ভয়াবহ উদাহরণ হয়ে উঠেছে। মাত্র ৩০-৪০ লাখ টাকায় সম্পন্নযোগ্য প্রকল্পকে ‘স্মার্ট হিসাব নকশা’র মাধ্যমে বানানো হয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকার!
তথ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এই চক্রের পেছনে নেতৃত্ব দিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ মমিনুল ইসলাম, যার প্রত্যক্ষ নির্দেশে বাতিল হওয়া টেন্ডার পুনরায় অনুমোদন পেয়েছে—এবং তিনবার অস্বাভাবিক গতিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে গণপূর্ত সার্কেল ৩-এ।
তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রকল্প পরিকল্পনায় দুর্নীতির গভীরে আছেন পরিকল্পনা মহা শাখার ইনচার্জ আরিফ হোসেন, যিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে দায় এড়িয়ে যান, অথচ সরজমিন তথ্য বলছে, তার নির্দেশেই পুরনো স্টিমেট জোর করে চালু রাখা হয়।
আর ফিল্ড পর্যায়ে সরাসরি বাস্তবায়নের নামে নাটক পরিচালনা করছেন গণপূর্ত সার্কেল ৩-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূরুল আমিন মিয়া এবং নির্বাহী প্রকৌশলী এইচ এম ফাইজুল, যাঁরা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে দায়সারা কাজ দেখিয়ে বিল তুলছেন কোটি টাকায়।
দুর্নীতির ধরন:
প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অস্বাভাবিক তৎপরতা
বাতিল টেন্ডার হঠাৎ পুনরায় অনুমোদন
মানহীন স্টিমেট দিয়ে কাজ দেখানো
নির্ধারিত সময়ের আগেই বরাদ্দ উত্তোলনের তড়িঘড়ি
রিপোর্ট জালিয়াতিতে পরিচালকের হস্তক্ষেপ
অডিট ও তদন্তের দাবি:
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, পুরো প্রকল্প ছিল বাজেট বরাদ্দের আগে টাকা উত্তোলন করে তা ভাগবাটোয়ারার একটি কৌশল। এই তৎপরতা এখনই বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্নীতির উদাহরণ তৈরি হবে।
সচেতন মহলের দাবি—এই ঘটনায় জড়িত সকল কর্মকর্তা বিশেষ করে মোঃ মমিনুল ইসলাম, আরিফ হোসেন, নূরুল আমিন মিয়া ও এইচ এম ফাইজুল—এদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে স্বাধীন তদন্ত, অডিট ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
“প্রকল্প বাস্তবায়ন নয়, বরং মূল লক্ষ্য ছিল বাজেট ‘উপলব্ধি’ করে তা ভাগাভাগি করা—এটি কেবল দুর্নীতি নয়, রাষ্ট্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা,” —এক কর্মকর্তা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।