দেশে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) নিবন্ধনের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে এবং দলটি দেশের ব্যাতিক্রমী সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল হক।
বাংলাদেশ সংস্কার পার্টির (বিআরপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে একটি "গভীর সংকট" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, "মব সন্ত্রাস, দুর্নীতি, খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির মতো অপরাধ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। এই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এবং তারা আর এটি মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।"
আজ বিকেল ৪টায় দলটির নতুন সদস্যদেরকে উপস্থিতিতে একটি ভার্চুয়াল মিটিং নেতাকর্মীদের সাথে দলটির মহাসচিব জনাব তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জনগনের আশাভরসাস্থল প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তবর্তীকালীন সরকার। জুলাইয়ের গণঅভ্যূত্থানের পর জনগনের সকল আশাভরসাস্থলটি প্রতিটি স্তরে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ও সমালোচিত হয়েছে। দেশের সকল প্রশাসনিক কাঠামো এখন ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ হিসেবে তিনি একটি ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিতে হবে। তাই জনগণের ন্যায্য দাবি ও আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) তাদের পাশে থাকবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করে বলেন, "প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া তাড়াহুড়ো করে নির্বাচন আয়োজন করা হলে দেশে আবারও ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরে আসার ঝুঁকি রয়েছে।" সরকারের প্রতি তার আহ্বান, সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ বা "লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড" নিশ্চিত করে একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, তবে তার আগে অবশ্যই রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, সেগুন বাগিচায় বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জনাব মেহেদী হাসানকে নেতাকর্মীদের সাথে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। পুরানা পল্টনে ‘ভাসানী জনশক্তি পার্টি’-র কার্যালয়েও দলটির চেয়ারম্যানকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে চলতে দেখা যায়। এছাড়া বাংলামোটরে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’ এবং বনানীতে ‘জনতার দল’-এর সুসংগঠিত ও সক্রিয় কার্যালয় পাওয়া গেছে, যেখানে সার্বক্ষণিক কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন।
এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে যে, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা অনেক দলেরই সাংগঠনিক ভিত্তি কেবল কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। এটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
উল্লেখ্য দেশে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রাথমিকভাবে বাছাই হওয়া যে ২২টি দলকে ঘোষনা করেছে সেগুলো হলো; বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), আম জনতার দল, ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সলুশন পার্টি ও নতুন বাংলাদেশ পার্টি।