গ্রাম থেকে ঢাকায়, অভিনেতা থেকে সংগঠক: নওগাঁ জেলার পত্নীতলার শিহাড়া ইউনিয়নের আমন্ত গ্রামের ছেলে ইমরান হাসো। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী, মিশুক এবং সাহসী হিসেবে পরিচিত। স্কুলজীবনে খেলাধুলা ও বিতর্কে জেলার সেরা, আর আজ তিনি অভিনয় জগতে আলোচিত নাম।
১৯ এপ্রিল, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। অভিনয়শিল্পী সংঘের ২০২৫-২০২৮ মেয়াদের নির্বাচন।
এদিন ইতিহাস গড়লেন তরুণ অভিনেতা—ইমরান হাসো।
মাত্র ২৭ বছর বয়সে, সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বাজিমাত করলেন তিনি। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে সর্বোচ্চ ৪৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে এক নজির গড়লেন হাসো। ৬৯৭ জন ভোটারের মধ্যে ৫৫২ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, আর সেই ভোটে এমন দাপুটে জয়—এ যেন এক উজ্জ্বল নজির।
২০১৫ সালে হা-শো সিজন ৩-তে অংশগ্রহণ করে যাত্রা শুরু, এরপর থিয়েটার এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ-এ অনার্স শেষ করে নিয়মিত মঞ্চ ও পর্দায় কাজ শুরু করেন। এ পর্যন্ত ২৭টি সিনেমা ও ৫০০-এর বেশি নাটকে অভিনয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে: সিনেমা: সুলতানপুর, লাল শাড়ি, শান, জ্বীন, নাটক: বকুলপুর, অচিনপুর তাফালিং, আদম, জলকুমারী, তোফাজ্জলের শেষ ভাত।
মানবিকতায় অতুলনীয় হাসো: ইমরান হাসো শুধু অভিনয়েই নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যও পরিচিত। করোনা মহামারি, বন্যা, কিংবা ছাত্র আন্দোলন—সবখানে সরব ও সাহসী উপস্থিতি ছিল তার।
বন্যায় গলা পানিতে নেমে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, শেরপুর, রংপুর, কুড়িগ্রামসহ বহু জেলায়। ছাত্রদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন, এমনকি নিজের শিল্পী সত্তাকে ছাপিয়ে প্রতিবাদী কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন।
জনপ্রিয়তার শীর্ষে: নির্বাচনের দিন ভোট দিতে এসেছিলেন মামুনুর রশীদ, জাহিদ হাসান, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, নিলয়, সজলসহ অসংখ্য তারকা। সবার মুখে ছিল একটাই নাম—ইমরান হাসো। তার সহজ-সরল ব্যবহার, নিষ্ঠা, সততা এবং দায়িত্ববোধ সবার মন জয় করে নিয়েছে।
নির্বাচনের পরে ইমরান হাসো বলেন: "আমি আমার শিল্পীদের কাজেই সবসময় পাশে ছিলাম, থাকব। এই জয় শুধু আমার না, এটি পুরো শিল্পী সমাজের জয়। দোয়া করবেন, আমি যেন এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি।"
বাংলাদেশ সকাল/ ইস