
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি ও খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করা হবে।” তিনি মনে করেন, শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকভিত্তিক শিক্ষা নয়, শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন সংস্কৃতি ও খেলাধুলার সঙ্গে সক্রিয় সম্পৃক্ততা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে বিএনপির দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। কর্মশালাটি আয়োজন করে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি।
তারেক রহমান বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব কৃষ্টি, কালচার ও ঐতিহ্য আছে। যেমন লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রাম বা কুষ্টিয়া—সব এলাকার সংস্কৃতিই আমাদের জাতীয় পরিচয়ের অংশ। এই বৈচিত্র্যকে আমরা লালন করব, এগিয়ে নেব।”
তিনি বলেন, “বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কৃতি ও খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করা হবে। শিশুদের মেধা ও মননের পূর্ণ বিকাশে এ পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
তিস্তা নিয়ে ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি:
তিস্তা নদী নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু বিএনপি চায় বাস্তবসম্মত সমাধান। প্রায় তিন কোটি মানুষ এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। তাই বিএনপি সরকার গঠন করলে খাল খননসহ পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নেয়া হবে।”
রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে ৩১ দফা:
তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একনায়কতন্ত্রের শাসনে জিম্মি। আমাদের ৩১ দফা বাস্তবায়নই পারে এই দেশকে সত্যিকারের গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনতে।”
তিনি আরো জানান, “বিএনপি সরকারের আমলে শতাধিক সংস্কৃতিকর্মীকে সহযোগিতা করা হয়েছিল। আবার সেই দিন ফিরিয়ে আনাই আমাদের অঙ্গীকার।”
অন্য নেতাদের প্রতিক্রিয়া:
কর্মশালার প্রথম অধিবেশনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হবে।”
ভারতের প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেও তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ প্রমাণ করেছে, তারা বাইরের প্রভুত্ব মানে না। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানই তার প্রমাণ।”
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি প্রমুখ।
এই কর্মশালায় তারেক রহমান যে প্রতিশ্রুতিগুলো দিয়েছেন, সেগুলো শুধু রাজনৈতিক ঘোষণা নয়—এগুলোই হতে পারে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নতুন পথের রূপরেখা। শিশুদের পূর্ণ বিকাশ, সংস্কৃতি রক্ষা ও জাতীয় সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার—এই তিনেই মিলছে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার।
বাংলাদেশ সকাল/ ইস