০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিজি হাসপাতালে নাটক, সেখান থেকেই অপকর্মে ব্যস্ত খন্দকার রাহাত!

সাম্প্রতিক সময়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ১৪ দলীয় শীর্ষ নেতা ডা. খন্দকার রাহাত হোসেন, যিনি সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর খালাতো ভাই হিসেবে পরিচিত। রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উসকানি এবং কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তার জামিন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত কার্যক্রম নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, হেভি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (GHCL)-এর সাবেক চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুস সাবুর খানের দীর্ঘদিনের প্রভাব ও অবৈধ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে রাহাতের জামিনের পেছনে ভূমিকা রাখা হয়েছে। আদালতের একটি অংশে অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নার মাধ্যমে প্রভাব খাটানোর অভিযোগও উঠেছে।

অথচ, রাহাতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে রয়েছে GHCL ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ। উল্লেখ্য, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের সাবেক মালিক ও রাহাতের ভগ্নিপতি ইমরান বর্তমানে লন্ডনে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন বলে জানা গেছে।

গত ২২ মে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে রাহাত গ্রেপ্তার হন। পরদিন আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই অসুস্থতার অজুহাতে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রথমে কারা হাসপাতাল এবং পরে শাহবাগের বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিজি) প্রিজন সেলে স্থানান্তরিত হন তিনি।

সূত্রগুলো দাবি করছে, রাহাত ওই প্রিজন সেল থেকেই রাজনৈতিক তৎপরতা এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

সচেতন মহলের মতে, এই ঘটনা দেশে প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের নেটওয়ার্ক কীভাবে বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে, তার একটি উদাহরণ। GHCL ও অপসোনিন সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির ইতিহাস এবং সাবুর খানের প্রভাব বলয় এখনো সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশের অভিযোগও সামনে এসেছে।

সংশ্লিষ্ট মহল রাহাতের জামিন অবিলম্বে বাতিল, GHCL ও ইউনাইটেড এয়ারের আর্থিক দুর্নীতি ও পাচার তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।

পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলকে রাজনৈতিক কার্যকলাপের আখড়ায় রূপান্তর করার পেছনে যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনারও আহ্বান উঠেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সাবধানে সড়কে চলি

পিজি হাসপাতালে নাটক, সেখান থেকেই অপকর্মে ব্যস্ত খন্দকার রাহাত!

Update Time : ১০:০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫

সাম্প্রতিক সময়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ১৪ দলীয় শীর্ষ নেতা ডা. খন্দকার রাহাত হোসেন, যিনি সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর খালাতো ভাই হিসেবে পরিচিত। রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উসকানি এবং কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তার জামিন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত কার্যক্রম নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, হেভি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (GHCL)-এর সাবেক চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুস সাবুর খানের দীর্ঘদিনের প্রভাব ও অবৈধ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে রাহাতের জামিনের পেছনে ভূমিকা রাখা হয়েছে। আদালতের একটি অংশে অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নার মাধ্যমে প্রভাব খাটানোর অভিযোগও উঠেছে।

অথচ, রাহাতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে রয়েছে GHCL ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ। উল্লেখ্য, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের সাবেক মালিক ও রাহাতের ভগ্নিপতি ইমরান বর্তমানে লন্ডনে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন বলে জানা গেছে।

গত ২২ মে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে রাহাত গ্রেপ্তার হন। পরদিন আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই অসুস্থতার অজুহাতে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রথমে কারা হাসপাতাল এবং পরে শাহবাগের বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিজি) প্রিজন সেলে স্থানান্তরিত হন তিনি।

সূত্রগুলো দাবি করছে, রাহাত ওই প্রিজন সেল থেকেই রাজনৈতিক তৎপরতা এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

সচেতন মহলের মতে, এই ঘটনা দেশে প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের নেটওয়ার্ক কীভাবে বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে, তার একটি উদাহরণ। GHCL ও অপসোনিন সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির ইতিহাস এবং সাবুর খানের প্রভাব বলয় এখনো সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশের অভিযোগও সামনে এসেছে।

সংশ্লিষ্ট মহল রাহাতের জামিন অবিলম্বে বাতিল, GHCL ও ইউনাইটেড এয়ারের আর্থিক দুর্নীতি ও পাচার তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।

পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলকে রাজনৈতিক কার্যকলাপের আখড়ায় রূপান্তর করার পেছনে যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনারও আহ্বান উঠেছে।